লোকসংস্কৃতির প্রচারে লোক-প্রসার প্রকল্প
পশ্চিমবঙ্গের বৈচিত্র্যপূর্ণ ও বর্ণমর্ণয় লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন লোক-আঙ্গিকের বা ধারার সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ এবং সমবৃদ্ধির পাশাপাশি লোকশিল্পীদের জীবনের মানোন্নয়ন ঘটানো, তাঁদের যথাযথ মর্যাদাদান এবং আর্থিক সহায়তা করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এছাড়া, এই প্রকল্পকে হাতিয়ার করে লোকসংস্কৃতির শক্তিশালী মাধ্যমটিকে জনসচেতনতা ও উন্নয়নমলূক কাজের প্রচারে লাগানো হচ্ছে ।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে লোকশিল্পীদের শিল্পী পরিচয়পত্র দেওয়া হচ্ছে , ব্যবস্থা করা হয়েছে শিল্পীদের জন্য বহাল ভাতা। দুঃস্থ ও বয়স্ক লোকশিল্পীদের জন্য মাসিক পেনশনেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে । ৬০ বছরের বেশি বয়সের লোকশিল্পীরা প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে পেনশন পাচ্ছেন। ৬০ বছরের কম বয়সের লোকশিল্পীরা সরকারের নানা প্রচারের কাজে অংশ নিচ্ছেন এবং সাংস্কৃতিক উৎসব-অনুষ্ঠানে তাঁদের অসাধারণ শিল্পনৈপুণ্য প্রদর্শনের সুযোগ পাচ্ছেন। মাসে ১০০০ টাকা করে বহাল ভাতা পাচ্ছেন তাঁরা। কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, শিক্ষাশ্রী, খাদ্যসাথী, সবজুশ্রী, সবুজসাথী, সমব্যথী ইত্যাদি প্রকল্পগুলি র প্রচারে বিশ্বখ্যাত লোকশিল্পীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ভূমিকা পালন করছেন এবং সরকারি প্রচারে অংশ নিয়ে তাঁরা অনুষ্ঠান পিছু ১হাজার টাকা সম্মান দক্ষিণা পাচ্ছেন। পেনশন ও বহাল ভাতার টাকা শিল্পীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা পড়ে যায়। সরকারের উন্নয়নমলূক প্রকল্পগুলোকে সফল করে তুলতে লোকশিল্পীরা তাঁদের আকর্ষণীয়, বর্ণময়, সহজবোধ্য আঙ্গিক ব্যবহার করছেন। সাধারণ মানুষের কাছে এই ভাবে তাঁরা প্রকল্পে র সুবিধা গ্রহণের তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এই লোকপ্রসার প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক পরম্পরা ও ঐতিহ্যের বিকাশের কাজকে অপ্রতিহত করে তুলেছেন। প্রত্যেক জনগোষ্ঠীই আজ নিজেদের হারানো ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে এগিয়ে এসেছে । বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ‘বোর্ড ’ গঠনের মাধ্যমে এই কাজ আরও গতি পাচ্ছে । লোক-সংস্কৃতির নানা ধারা পুনরুজ্জীবিত হওয়ায় বাংলার সাংস্কৃতিক সম্পদের গুণমান ও পরিমাণ— দুটোই বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরাও নিজস্ব সাংস্কৃতিক ধারাকে বাঁচিয়ে রাখা ও উন্নত করার প্রয়াস নিচ্ছেন। তাঁদের কাছে ও শিল্পীর পরিচয়পত্র এবং বহাল ভাতা দুটিই খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ।
Comments.